ইসলামে খাদ্যবিধি অনুযায়ী, হালাল (অনুমোদিত) ও হারাম (নিষিদ্ধ) খাদ্যের মধ্যে পার্থক্য নির্ধারিত হয়েছে। এই বিধি-কানুনের মূল ভিত্তি হলো কুরআন এবং হাদিস, যেখানে আল্লাহ এবং তার রাসুল (সা.) বিভিন্ন খাদ্যের বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন।
হালাল খাদ্য
হালাল অর্থ "অনুমোদিত" বা "বৈধ"। হালাল খাদ্য বলতে সেই সকল খাদ্যকে বোঝায় যা ইসলামের বিধি অনুযায়ী ভক্ষণযোগ্য। কিছু মূল নির্দেশনা:
- মাংস: প্রাণীকে ইসলামী পদ্ধতিতে জবাই করতে হবে। জবাইয়ের সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করতে হবে। পশু কষ্ট না পেয়ে মৃত্যুবরণ করা উচিত এবং শরীর থেকে সম্পূর্ণ রক্ত বের করে দিতে হবে।
- উদ্ভিজ্জ খাবার: সব ধরনের ফলমূল, শাক-সবজি হালাল, যদি তা কোনো হারাম উপাদানে দূষিত না হয়।
- পানি ও পানীয়: বিশুদ্ধ পানি এবং অন্যান্য পানীয়, যা মাদক দ্রব্য নয় এবং শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়, তা হালাল।
হারাম খাদ্য
হারাম অর্থ "নিষিদ্ধ" বা "বৈধ নয়"। ইসলামে কিছু খাদ্য হারাম হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যা কোনো অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য নয়। কিছু উদাহরণ:
- শূকরের মাংস: কুরআনে স্পষ্টভাবে শূকরের মাংস নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
- মদ ও মাদক দ্রব্য: যে কোনো ধরনের মদ্যপান ও মাদকদ্রব্য গ্রহণ হারাম।
- বেআইনি ভাবে মারা প্রাণী: কোনো প্রাণী যদি স্বাভাবিকভাবে বা অস্বাভাবিকভাবে মারা যায় এবং তা ইসলামী পদ্ধতিতে জবাই না করা হয়, তা হারাম।
- রক্ত: রক্ত পান করা বা রক্তযুক্ত খাদ্য খাওয়া হারাম।
কুরআন ও হাদিসের উদ্ধৃতি
কিছু গুরুত্বপূর্ণ উদ্ধৃতি যা হালাল ও হারামের বিষয়গুলো স্পষ্ট করে:
- কুরআন: "হে লোক সকল, পৃথিবীর বৈধ এবং পবিত্র বস্ত্ত খাও। আর শয়তানের পদাংক অনুসরণ করো না। সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।" (সূরা বাকারা 2:168)
- হাদিস: নবী করীম (সা.) বলেন, "যা বৈধ তা স্পষ্ট এবং যা অবৈধ তাও স্পষ্ট।"
উপসংহার
ইসলামে খাদ্যবিধি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা মুসলমানদের দৈনন্দিন জীবনে পরিচালিত করে। হালাল ও হারামের এই নির্দেশনাগুলো মুসলিমদের পবিত্র ও সুস্থ জীবনযাপনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
